এস এম জাহির আব্বাস: স্যাট নিউজ: ০৫ অক্টোবর: "করিমগঞ্জ জেলার প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজ রাতাবাড়িতে স্থাপন করতে হবে" সাংসদ কৃপা নাথ মালার এমন মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করলেন পাথারকান্দির বিজেপি নেতা-কর্মী সহ পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা। করিমগঞ্জে প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজ রাতাবাড়িতে স্থাপন করা নিয়ে সাংসদ কৃপানাথ মালার মন্তব্যের বিরোধিতা করে পাথারকান্দি সমষ্টির দলীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি সহ চা যুবমোর্চার কর্মকর্তারা রবিবার পাথারকান্দি সমষ্টির সোনাখিরায় দলীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সাংসদ কৃপানাথ মালার হঠকারী সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেন স্ব-দলীয় কর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে চান্দখিরা জিপি সভাপতি অনিল কুমার ত্রিপাটি বলেন, করিমগঞ্জের প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজটি শেষ পর্য্যন্ত সাংসদ তাঁর নিজ সমষ্টি রাতাবাড়িতে স্থাপনের পরিকল্পনা নিচ্ছেন, এটি অতি দুঃখজনক ঘটনা। তাঁদের অভিযোগ, বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলার মোট আটটি সমষ্টির ভোটারদের মূল্যবান ভোটে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। এমনকি বিগত রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার একমাত্র পাথারকান্দি সমষ্টি থেকেই তিনি রেকর্ড পরিমাণের ভোট পেয়ে দিল্লি পাড়ি দেন। তাছাড়া এই জিপি সভাপতির বক্তব্য, চলতি বছরের ২৪ আগষ্ট জেলার প্রস্তাবিত এই মেডিক্যাল কলেজটি পাথারকান্দি সমষ্টিতে স্থাপনের জোরালো দাবি জানিয়ে সমষ্টির বারো জিপির পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের স্বাক্ষর করা এক স্মারকপত্রে এই দাবির স্বপক্ষে সাংসদ নিজে স্বাক্ষর করেন। যেটি রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের মন্ত্রী ড.হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। এরপর তিনি কিভাবে তাঁর সমষ্টি রাতাবাড়িতে এই মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের উদ্দ্যেগ নেন বলে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন। বলেন, তাঁর যদি এমন উদ্দেশ্য থাকত তাহলে কেন সেদিন এই দাবির স্বপক্ষে মন্ত্রীর কাছে প্রেরিত স্মারকপত্রে স্বাক্ষর করলেন। তাই তিনি এটাকে নিছকই এক ভাওতাবাজি বলে উল্লেখ করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে জিপি সভানেত্রী নমিতা চাষা গোয়ালা তাঁর বক্তব্যে বলেন, পাথারকান্দি সমষ্টির আকাইদুমে এই মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের জন্য প্রায় বারোশত বিঘা জমি রয়েছে। যেখানে অনায়াসে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করা যায়। তাছাড়া একটি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করতে হলে যা যা সুযোগ সুবিধা থাকা প্রয়োজন তাঁর সবগুলোই রয়েছে এই সমষ্টিতে। অসম-ত্রিপুরা ৮ নং জাতীয় সড়ক, ছাড়া ও রয়েছে আটটি চা-বাগান, রয়েছে দুটি থানা, সার্কেল কার্যালয়। তিনি বলেন, আজকের দিনে কোন মুমুর্ষ রোগীকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাবার আর্থিক ও শারীরিক সমস্যায় পড়তে হয় স্থানীয়দের। তাই এই মেডিক্যাল কলেজটি পাথারকান্দি সমষ্টিতে স্থাপন হলে একদিকে যেমন স্থানীয়দের এই সমস্যার সুরাহা হবে অন্যদিকে পাশ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরার জনগণ ও এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। তিনি এই গণদাবীর জোরালো আওয়াজ নিয়ে আগামীদিনে সমষ্টির সকল জিপির পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা একজোট হয়ে দিশপুরে মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর শরণাপন্ন হতেও পিছপা হবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন দলের এই মহিলা নেত্রী।
। সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জ জেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিমলা শুক্লবৈদ্য, জিপি সভাপতি অন্তু বাল্মিক দাস, সজল কুর্মি, কল্প দেব, আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সদস্যা মনি তাঁতী,
শিপ্রা কৈরী প্রমুখ।
এদিকে সম্প্রতি বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে সাংসদ কৃপানাথের এধরণের মন্তব্য ঘিরে দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে পাথারকান্দিতে। কারণ তাঁদের মতে করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দির আটটি বিধানসভা সমষ্টি থেকে নির্বাচিত এই জনপ্রতিনিধির এধরণের পক্ষপাতিত্ব মোটেই শোভনীয় নয়।