satnewsnetwork

মণিপুরে প্রধানমন্ত্রীর সফর কেবল প্রতীকী নয়, প্রকৃত সমস্যা সমাধানে হোক : মন্তব্য স্থানীয়দের

খবর

ইম্ফল, ১৩ সেপ্টেম্বর: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে মণিপুরে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাজসজ্জা করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজ্য সরকার অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর মণিপুর সফর নিশ্চিত করার পর, নাগরিকরা জোরালোভাবে আশা প্রকাশ করেছেন যে এই সফর কেবল প্রতীকী হবে না বরং রাজ্যের দীর্ঘস্থায়ী অস্থিতিশীলতার মূল কারণগুলো মোকাবেলা করবে।

 

এক সাক্ষাৎকারে কোকোমি-র আহ্বায়ক খুরাইজম আথৌবা জোর দিয়ে বলেন যে, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে কোনো প্রতীকী বা সীমিত আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয় । সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলা করা নিয়ে আলোচনা দরকার। আথৌবা বলেন, "অবৈধ অভিবাসী এবং অভিবাসী-উৎস জনসংখ্যার শনাক্তকরণ রাজ্যের সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে । এমন জনসংখ্যাগত ভারসাম্যহীনতা সমাধান মূল বিষয়।" তিনি আরও বলেন, "আমরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য এনআরসি বা অনুরূপ কোনো ব্যবস্থার দাবি করে আসছি।"

 

তিনি আরও জানান, "অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের (IDPs) মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে পুনর্বাসন করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।" তিনি যোগ করেন, "ত্রাণ শিবিরে দীর্ঘ সময় আটকে থাকা তাদের মানসিক আঘাতকে আরও গভীর করে, জীবিকা ব্যাহত করে এবং রাষ্ট্রের প্রতি আস্থা নষ্ট করে।" আথৌবা নাগরিকদের অবিলম্বে এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।

 

আথৌবা প্রধানমন্ত্রীকে প্রক্সি যুদ্ধ, মাদক-সন্ত্রাসবাদ এবং জনসংখ্যাগত আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান । কেননা এইসব কারণ সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তিনি বলেন, "অপারেশন স্থগিত করার চুক্তিটি deceptive এবং চলমান অস্থিরতার মূল কারণ।"

 

সম্প্রদায়টি দাবি করে যে প্রধানমন্ত্রীকে সাংবিধানিক নিশ্চয়তা এবং মৌলিক অধিকারগুলো, বিশেষ করে রাজ্যের সর্বত্র অবাধ চলাচলের অধিকার, যা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সীমাবদ্ধ রয়েছে, তা পুনরায় নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, "এই অধিকারগুলো পুনরুদ্ধার না হলে শান্তি ফাঁকা ও অসম্পূর্ণ থাকবে।"

 

এছাড়াও, আথৌবা প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিকত্ব বা রাজ্যত্বকে জাতিগত বিষয় না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং সতর্ক করেন যে এই ধরনের পদক্ষেপ Balkanisation-কে দ্রুততর করতে পারে। 

 

তাঁর বক্তব্যে আথৌবা জোর দিয়ে বলেন যে, প্রধানমন্ত্রীর সফরে সত্য-কে স্বীকার করা, সুষ্ঠভাবে কাজ করা আবশ্যক। তিনি সতর্ক করেন, "এই বাস্তবতাগুলোকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র আর্থিক প্যাকেজ বা উদ্বোধনের উপর গুরুত্ব দিলে ক্ষত আরও গভীর হবে এবং সমস্যা বাড়বে।"

 

তিনি বলেন, "মানুষের প্রত্যাশা খুব বেশি। এই সফরটি মণিপুর রাজ্যের চলমান সংকটের জন্য একটি উপযুক্ত পদক্ষেপ হওয়া উচিত।"

 

প্রধানমন্ত্রীর সফর সম্পর্কে গণমাধ্যমকে ওয়ানখেঁই অ্যাসেম্বলি কনস্টিটিউয়েন্সির বিধায়ক থাঙজাম বলেন, "এই সফর ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।" তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক ধারণা এবং সমাধান নিয়ে এসেছেন, যার কারণেই তিনি এত দীর্ঘ সময় পর সফর করছেন। তিনি যোগ করেন, "তাঁর এখন আসার সিদ্ধান্তই দেখায় যে তাঁর মনে পরিকল্পনা ও সমাধান রয়েছে।"

 

বিধায়ক আরও বলেন যে, "গত আড়াই বছর ধরে আমরা ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছি এবং পদক্ষেপের জন্য জোর দিচ্ছি। আমরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে না পারলেও, আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অন্যান্য নেতাদের মাধ্যমে তাঁকে অনুরোধ জানাতে থাকি। তাই, আমরা আগে দেখা করতে না পারলেও আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছি। এখন যেহেতু আমরা অবশেষে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছি, আমি বিশ্বাস করি এটি আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি উপস্থাপন করার এবং সমাধান চাওয়ার জন্য একটি

খুব ভালো সুযোগ।"

Posted On: Saturday, September 13, 2025 9:38 AM
blog comments powered by Disqus