satnewsnetwork

করিমগঞ্জের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব, বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি জনদরদী নেতা রথীন্দ্র ভট্টাচার্যের জীবনাবসান

খবর

নিউজ ডেস্ক: স্যাট নিউজ১৬ সেপ্টেম্বর: করিমগঞ্জের প্রবীণ রাজনীতিবিদ তথা ভারতীয় জনতা পার্টির প্রাক্তন জেলা সভাপতি রথীন্দ্র ভট্টাচার্য আর নেই। দীর্ঘদিন জীবনযুদ্ধে লড়াই করে অবশেষে বুধবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আজীবন নিষ্ঠার সাথে রাজনীতিতে জড়িত এই বিরল ব্যক্তিত্বের প্রয়াণে জেলাজুড়ে শোকাকোল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
          করিমগঞ্জের রাজনীতি জগত থেকে এক ইন্দ্রপতন। দীর্ঘদিন কর্কট রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবনের সাথে লড়াই করে অবশেষে মৃত্যুকে জড়িয়ে ধরতে হলো প্রবীণ রাজনীতিবিদ রথীন্দ্র ভট্টাচার্যকে। আজীবন নিষ্ঠা ও সততার সাথে রাজনীতি করা এমন ব্যক্তিত্ব সত্যিই বিরল। বিগত বেশ কিছুদিন থেকেই কর্কট জনিত রোগে ভুগছিলেন রথীন্দ্রবাবু। কিছুদিন পূর্বে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করা হয়। সেখানেই বুধবার সকাল ৭-১২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যু সংবাদ পৌছামাত্র করিমগঞ্জ জেলায় এক শোকাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নিষ্ঠা ও সততার সাথে কাজ করে যাওয়ার এক উদাহরণ ছিলেন তিনি। ফলে তার জনপ্রিয়তাও খুব বেশি ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। কেবল তাই নয় জেলার সবক'টি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল। কংগ্রেস বিজেপি এআইইউডিএফ সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা রথীন্দ্রবাবুর মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করতেন। করিমগঞ্জের অধিকাংশ সাংবাদিকরাও তাকে অতি শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সাহায্যার্থে সবসময় এগিয়ে ছিলেন তিনি। ফলে হিন্দু-মুসলিম সব শ্রেণীর মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন। একাধারে রাজনীতিবিদ থাকার পাশাপাশি করিমগঞ্জের একটি ইতিহাস বই বলা যেতে পারে তাঁকে। স্বাধীনতার আগে থেকে শুরু করে বর্তমান পরিস্থিতি সবকিছুই ছিল তার নখদর্পণে। ৬১ এর ভাষা আন্দোলন কিংবা ৭১ এর যুদ্ধ কোনও বিষয়ে জানতে হলেই সকলেই ছুটে যেতেন রথীন্দ্র বাবুর কাছে। নির্দ্বিধায় অনর্গল করিমগঞ্জের ইতিহাস তুলে ধরতেন তিনি। প্রশাসন থেকে রাজনীতিবিদ সকলের কাছেই রথীন্দ্র বাবুর কোন বিকল্প নেই। আজীবন রাজনীতি করার পাশাপাশি বাঙালির অস্তিত্বের লড়াইয়েও এগিয়েছিলেন তিনি। দু-দুবার করিমগঞ্জ বিজেপির জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। আজীবন নিষ্কলঙ্কতার সাথে রাজনীতি করে গেছেন। কঠিন পরিস্থিতিতেও বিজেপি দলের হাত ছাড়েননি তিনি। বহু প্রতিকূলতার মধ্যেও সময় দলের সাথে থেকেছেন। বলতে গেলে করিমগঞ্জ বিজেপির এক মহীরুহ ছিলেন তিনি। বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের সাথেও সরাসরি জড়িত ছিলেন তিনি। বহু আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। এনআরসি নিয়ে যখন ব্যতিব্যস্ত করিমগঞ্জের মানুষ সে সময়ে অনেকেই তাঁর সান্নিধ্যে এসে উপায় খুঁজে পেয়েছিলেন।  বিগত কিছুদিন থেকে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও অনেকেই তাঁর বাড়িতে ছুটে গেছেন বহু ইতিহাস সম্পর্কে জানতে। তাঁর মৃত্যুতে করিমগঞ্জ জেলার সকল স্তরের মানুষ গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন। অনেকের মতেই তাঁর জায়গা পূরণ করা অসম্ভব। তাঁর মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হলো করিমগঞ্জের। তার মৃত্যুতে গভীর শোক জ্ঞাপন করেছেন সবকটি রাজনৈতিক দলের বহু নেতাকর্মী সহ সাংবাদিক মহল। 

Posted On: Wednesday, September 16, 2020 11:25 AM
blog comments powered by Disqus