নিউজ ডেস্ক: স্যাট নিউজ: ৯ সেপ্টেম্বর: করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি সমষ্টি হয়ে যাওয়া অসম ত্রিপুরা সংযোগী ৮ নম্বর জাতীয় সড়কটির অবস্থা বহুদিন থেকেই বেহাল। বিশেষ করে সড়কটির কানাইবাজার থেকে পাথারকান্দির মুণ্ডমালা পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার অংশ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সড়কটি মেরামতির দাবিতে বিরোধী দল থেকে আরম্ভ করে বহু সংগঠন বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন করে এসেছে। কিন্তু বর্তমানে এই আন্দোলনের নামে আরম্ভ হয়েছে রাজনীতি। প্রদেশ কংগ্রেসের রাজ্যব্যাপী কার্যক্রম অনুযায়ী মঙ্গলবার পাথারকান্দি কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা সড়কটি মেরামতির দাবিতে আন্দোলনে নামেন। কংগ্রেসের এই আন্দোলনকে পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল নাটক বলে আখ্যায়িত করেন। তার মতে, মেরামতির কাজ আরম্ভ হওয়ার পর আন্দোলন করাটা সম্পূর্ণ নির্বাচনকেন্দ্রিক।
উল্লেখ্য, সমাগত বিধানসভা নির্বাচন।করোনা আবহের মধ্যেই রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত করে তুলেছে রাজ্যের সবকটি রাজনৈতিক দল। বিশেষ করে রাজ্যের মুখ্য দুটি রাজনৈতিক দল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে কাঁদা চুড়াছুড়ির মাত্রা তুঙ্গে উঠেছে। মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেসের রাজ্যব্যাপী কার্যসূচি অনুযায়ী করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি সমষ্টিতে থাকা ৮ নম্বর জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থা নিয়ে আন্দোলনে নামেন পাথারকান্দি কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন জেলা কংগ্রেসের অনেক নেতাকর্মীরাও। পাথারকান্দির প্রাক্তন বিধায়ক মনিলাল গোয়ালার নেতৃত্বে হওয়া আন্দোলনে কোভিড প্রটোকলের শ্রাদ্ধ করা হয়। সামাজিক দূরত্বের নিয়মকে জলাঞ্জলি দিয়ে অনেক কংগ্রেস নেতা কর্মীরা জমায়েত হন আন্দোলনে। দু একজনের মুখে মাস্ক পড়া থাকলেও অধিকাংশ আন্দোলনকারীরা পড়েননি মাস্ক।
সড়ক মেরামতির আন্দোলনে বসলেও মূল বিষয় ছেড়ে নিজে বিধায়ক থাকা অবস্থায় নিজের কর্মের খতিয়ান তুলে ধরেন প্রাক্তন বিধায়ক মনিলাল গোয়ালা। কংগ্রেসের এই আন্দোলনকে নাটক আখ্যায়িত করে ব্যাপক সমালোচনা করেন পাথারকান্দির বর্তমান বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল। তিনি বলেন বর্তমানে মেরামতির কাম আরম্ভ হওয়ার পর কংগ্রেসের এই আন্দোলন নাটক ছাড়া আর কি। ঠিকাদার সংস্থা ইতিমধ্যে ঠিকা লাভ করে সড়কটি মেরামতির কাম আরম্ভ করেছে। বৃষ্টির ফলে কাজে সামান্য অসুবিধা হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ গতিতে নির্মাণকার্য আরম্ভ হবে। বিধায়ক বলেন, আসলে পাথারকান্দির কংগ্রেসী নেতাকর্মীদের বর্তমানে বলার কিছুই নেই তাই এটাকে একটা ইস্যু বানানো হয়েছে। তিনি আরোও বলেন, কেবল পাথারকান্দি কেন, ২০১৬ সাল পর্যন্ত কংগ্রেসিদের কৃপায় বরাক উপত্যকার সবকটি রাস্তাঘাটের অবস্থা বেহাল হয়ে উঠেছিল। উদাহরণস্বরূপ তিনি করিমগঞ্জ থেকে ত্রিপুরা সীমান্ত চুড়াইবাড়ি পর্যন্ত জাতীয় সড়কটির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সিদ্দেক আহমেদ সেই সময় মন্ত্রী ছিলেন। সেই সময় কোন কারণে উড়িষ্যার কোম্পানি এআরএসএস কে কাজ অর্ধেক করে পালিয়ে যেতে হয়েছিল, যা বরাক উপত্যকা সহ সমগ্র অসমের লোক জানেন। এমনকি বর্তমানে চলতে থাকা পাথারকান্দি বাইপাস সড়কটির কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হওয়ার পরও মাত্র ২০০ মিটারের কাজ কেন সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না, এটাও সবার জানা। সেই ২০০ মিটার অংশে কাজ করতে গেলেই নানা মোকদ্দমায় ঠেলে দেওয়া হয় । এগুলো কারা করাচ্ছেন, এ নিয়ে সম্পূর্ণভাবে অবগত আছেন পাথারকান্দি বাসিন্দারা। ফলে রাস্তা নিয়ে এধরনের নাটক সব কিছুই বুঝেন পাথারকান্দির জনগণ । বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল দৃঢ়ভাবে জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই সম্পূর্ণ হয়ে উঠবে বেহাল হয়ে থাকা ৮ নম্বর জাতীয় সড়কের অংশ। আর এই কয়েকদিনের জন্য কংগ্রেসকে রাজনীতি করতে ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু ।