গৌরীশ নন্দী: স্যাট নিউজ: ২৬ সেপ্টেম্বর: এবার স্বাস্থ্য মন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট হয়ে উঠল, দুই সমষ্টির বিধায়ক এবং সাংসদের টানাটানিতে আজ পর্য্যন্ত শিলান্যাস হল না করিমগঞ্জের প্রস্তাবিত মেডিকেল কলেজের । স্থাস্থ্য, বিত্ত এবং পূর্তমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শুক্রবার করিমগঞ্জ সফরে এসে অনেক কিছু ঘোষণা করলেও অধরা রয়ে গেল মেডিক্যাল কলেজের স্বপ্ন । মন্ত্রী ভাষন প্রসঙ্গে বলেন, রাতাবাড়ির বিধায়ক বিজয় মালাকার ও পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল তথা সাংসদ কৃপানাথ মালা ঐক্যমতে স্থান চয়ন করার দশ দিনের মধ্যেই মেডিক্যাল কলেজের শিলান্যাস করবেন ।
শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মন্ত্রী প্রথমে রাতাবাড়ি সমষ্টির রামকৃষ্ণ নগরে উপস্থিত হয়ে এক হাজার আসন বিশিষ্ট প্রেক্ষাগৃহ সহ আনিপুর জামুয়াং সড়কের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন । প্রেক্ষাগৃহটির জন্য ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে তবে হাতে রয়েছে আরও ৪ কোটি । প্রয়োজনে সেই টাকাও দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি । এছাড়া আনিপুর জামুয়াং সড়কের জন্য ৪২ কোটি, আনিপুর কদমতলা সড়কের জন্য ১০ কোটি, কদমতলা ভৈরবনগর সড়কের জন্য ৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে ঘোষণা করেন তিনি । রামকৃষ্ণ নগর শহরের সড়ক উন্নয়নের জন্য ২ কোটি, চা বাগানের গলিপথের জন্য ৫ কোটি এছাড়া সমষ্টির আরো কয়েকটি সড়কের জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে এ দিন রামকৃষ্ণ নগরে আয়োজিত সভায় ঘোষণা করেন মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা । সবমিলিয়ে রাতাবাড়ি সমষ্টিতে নির্বাচনের আগে পূর্ত বিভাগের বরাদ্দ করা প্রায় একশো কোটি টাকার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হবে বলে মন্ত্রী জানান । তবে বহু প্রতীক্ষিত মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে তাঁর পূর্বের দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে সরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, রাতাবাড়ির বিধায়ক বিজয় মালাকার ও পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল তথা সাংসদ কৃপানাথ মালা ঐক্যমতে স্থান চয়ন করার দশ দিনের মধ্যেই মেডিক্যাল কলেজের শিলান্যাস করবেন তিনি।
যদিও ২০১৬ নির্বাচনে তিনি ঘোষণা করেছিলেন করিমগঞ্জ জেলার যে সমষ্টির দলীয় প্রার্থী রেকর্ড ভোটে জিতবে সেই সমষ্টিতেই মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করা হবে বলে। শুধু তাই নয় সিংলা নদীর উপর পাঁচটি পাকা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও বেমালুম ভুলে গেলেন তিনি । যদিও তাঁর ঐ প্রতিশ্রুতির অঙ্গ হিসেবে চেরাগীতে একটি পাকা সেতুর কাজ আরম্ভ হয়েছে । কিন্তু বাকি চারটি সেতুর স্বপ্ন এখনও অধরা । ফলে তাঁর এ সফরে সিংলা নদীর পশ্চিম প্রান্তের শতাধীক গ্রামের মানুষের আশা পুরন করতে অসমর্থ হলেন রাজ্যের করিতকর্মা মন্ত্রী । রাত সাতটা নাগাদ মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা উপস্থিত হন পাথারকান্দিতে । সেখানে আয়োজিত জনসভায় কোভিড প্রটকোল ভেঙে ব্যাপক মাত্রায় লোকসমাগম হয় । এই পরিস্থিতি দেখে মন্ত্ৰী বলেন, এখানে উপস্থিত হয়ে লাগছে, যেনো নিৰ্বাচন আরম্ভই হয়ে গেছে । উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, কংগ্ৰেসকে নিয়ে এত চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই । তিনি বলেন, কংগ্ৰেস একটি আসনে জেতাও কষ্টকর হবে । আগন্তুক নির্বাচনে বিজেপি ১০০টি আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করবে, এনিয়ে নিশ্চন্ত থাকতে । এরপর মন্ত্রী হিমন্ত বলেন, এই মুহুৰ্তে রাজনীতি নিয়ে অধিক কথা বলবেন না । কেননা, এখন পর্য্যন্ত তার রাজনৈতিক মুড আসে নি । পূজার পরই তার রাজনৈতিক মুড আসবে । কিন্তু বিধায়ক কৃষ্ণেন্দুর রাজনৈতিক গাড়ি এই মুহুর্তেই এক্সপ্ৰেসের মতো দৌড়াচ্ছে বলে কৌতুক করেন তিনি । তিনি বলেন, কৃষ্ণেন্দু পালের রাজনৈতিক মুড সম্পূৰ্ণভাবে এসে গেছে । সমষ্ঠির কাজ নিয়েও বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পালের ভুয়সী প্রসংশা করেন তিনি । বলেন, পাথারকান্দিতে গত ৭০ বছরে কোনও কাজই হয় নি । প্রায় শূন্য থেকে কৃষ্ণেন্দুকে সমষ্ঠির উন্নয়নে কাজ করতে হচ্ছে ।
সভা শেষে মন্ত্রী পাথারকান্দির অসম-ত্ৰিপুরা সংযোগী ৮নং জাতীয় সড়কের বিপৰ্য্যস্ত অংশ পরিদৰ্শন করেন । গাড়ি চলাচলের অনপোযোগী সড়কটির পাথারকান্দি থেকে আছিমগঞ্জ পর্য্যন্ত বিপর্য্যস্থ অংশটি পরিদৰ্শন করে স্থানীয় লোকদের সাথে মত বিনিময় করেন । মন্ত্ৰীর এই পরিদৰ্শনে এলাকাৰ জনগন নতুন করে আশার আলো দেখতে পান ।
এদিকে দুটি জনসভাতেই স্বাস্থ্যমন্ত্ৰীর উপস্থিতিতে ব্যাপক মাত্ৰায় কোভিডের নিয়ম ভংগ করা পরিলক্ষিত হয় । ক্ষুদ্র পরিসরে উপচে পরে জনতার ভীড় । সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে কৰ্তব্যের খাতিরে যেনো দুটি জনসভাতেই কোভিডের নিয়ম মেনে চলার উপদেশ দেন মন্ত্রী । যে উপদেশ উপস্থিত সমর্থকরা কৰ্ণপাত না করাই পরিলক্ষিত হয় ।