
নিউজ ডেস্ক: শিলচরের ইটখোলাঘাট এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী হলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দলবদ্ধভাবে হামলা চালানো হলো আবুব মজুমদার ওরফে আবু নামে পরিচিত এক ঠিকাদারের বাড়িতে। এই ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলার পেছনে রয়েছে ব্যক্তিগত শত্রুতা, অভিযোগ-প্রত্যাঘাত এবং অবৈধ ব্যবসার যোগসূত্র নিয়ে স্থানীয় ক্ষোভ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী রাতের অন্ধকার নামতেই কয়েকজন যুবক আবুব মজুমদারের বাড়ির সামনে জড়ো হয়। তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিল যে আবুব নাকি এলাকার কয়েকজনকে বাংলাদেশি বলে অপমান করেছেন। এই অভিযোগ ঘিরেই হঠাৎ শুরু হয় দলবদ্ধ হামলা।
জানা গেছে আবুবকে বাড়ির সামনে পেয়ে প্রথমে কয়েকজন তার উপর চড়াও হয়। তাকে ঘিরে কিল-ঘুষি, লাথি মারা শুরু হয়। এর পাশাপাশি তাকে নিয়ে চলতে থাকে গালিগালাজ। অভিযোগ অনুযায়ী হামলাকারীরা আবুবকে অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযুক্ত করে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কে বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ করে দেন। ঘটনায় আবুব পালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হলেও তার সঙ্গে থাকা দুই সঙ্গী ব্যাপকভাবে মার খেয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং পাথরও ছোড়া হয়েছে । এ কারণে আবুবের বাড়িতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ।
পুলিশের হস্তক্ষেপে উত্তেজিত জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে রাতভর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনায় যুক্ত যুবকদের অধিকাংশই আশপাশ এলাকার বাসিন্দা এবং এর আগে থেকেই তারা আবুবের সঙ্গে নানা কারণে বিরোধে জড়িত ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে আবুব মজুমদার ও তার সঙ্গে থাকা আরও একজনকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
ঘটনা নিয়ে আবুবের ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি। ফলে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনও বক্তব্য সামনে আসেনি। তবে এলাকাবাসীর মধ্যে আলোচনা চলছে যে, আবুবের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই নানা ধরনের অভিযোগ জমে ছিল। সেই ক্ষোভই হয়তো এদিন দলবদ্ধ হামলার আকারে ফেটে পড়ে। এলাকায় বর্তমানে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং হামলার সঙ্গে কারা যুক্ত ছিল তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেছে প্রশাসন।