
নিউজ ডেস্ক : নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতার আবহে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন সুশীলা কার্কী। শুক্রবার ৭২ বছর বয়সী প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক মাধ্যম X হ্যান্ডেল যোগে শুভেচ্ছা জানিয়ে নেপালের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য ভারতের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির কথাও ব্যক্ত করেছেন।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও সেদিন এক বিবৃতিতে জানায়, “ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী, গণতন্ত্রের সহযোগী এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে ভারত নেপালের সঙ্গে জনগণের কল্যাণ ও সমৃদ্ধির স্বার্থে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকবে।” ভারতের এই আনুষ্ঠানিক বার্তা কে নেপালের নতুন রাজনৈতিক যাত্রার এক ইতিবাচক সমর্থন হিসেবে ধরা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে কেপি শর্মা ওলির সরকার ভেঙে পড়ে। ছাত্র-যুব সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে হওয়া আন্দোলনে দাবি ওঠে দেশের শাসন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন প্রয়োজন। ওলির পদত্যাগের পর সাময়িকভাবে সেনার হাতে ক্ষমতা গেলেও আন্তর্জাতিক চাপ ও আন্দোলনের তীব্রতায় সেনা সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়। সেসময় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলে কার্কী শর্ত রাখেন, তিনি অন্তত এক হাজার মানুষের লিখিত সমর্থন চাইবেন। মুহূর্তের মধ্যেই সেই সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে যায়। এই গণসমর্থনই তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে দৃঢ় করে। যদিও আন্দোলনরত ছাত্র-যুবদের একাংশের তরফে ইঞ্জিনিয়ার কুল মান ঘিসিঙ ও কাঠমান্ডুর মেয়র-র্যাপার বলেন্দ্র শাহের নামও উঠে এসেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সর্বসম্মতভাবে কার্কীকেই অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।
ভারত ও নেপাল ঐতিহাসিকভাবে একে অপরের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দেশ। সীমান্ত, বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের কারণে নয়াদিল্লি চায়, নেপালে দ্রুত রাজনৈতিক স্থিতি ফিরে আসুক । প্রধানমন্ত্রী মোদির শুভেচ্ছা বার্তা এবং বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি নেপালের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। এদিকে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও কার্কীর শপথ নেপালের মানুষের মনে নতুন আশা জাগিয়েছে। একজন মহিলা নেত্রী হিসেবে তাঁর উঠে আসা গণতন্ত্র ও লিঙ্গসমতার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক। ভারতের সমর্থন নেপালের নতুন সরকারের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাও বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।