satnewsnetwork

শ্রদ্ধা ও আবেগের সাথে রথীন্দ্র ভট্টাচার্য স্মরণ করিমগঞ্জে

খবর

নিউজ ডেস্ক:স্যাট নিউজ:২৪ সেপ্টেম্বর: করিমগঞ্জ তথা বরাকের প্রবীণ রাজনীতিবিদ, ভাষা সংগ্রামী রথীন্দ্র ভট্টাচার্যকে স্মরণ করলেন করিমগঞ্জবাসি । বৃহস্পতিবার করিমগঞ্জ জেলা বিজেপির উদ্যোগে প্রয়াত রথীন্দ্র ভট্টাচার্যের স্মরণে এক স্মৃতিচারণ সভা আয়োজন করা হয়। সভায় প্রয়াতের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন উপস্থিত বক্তারা।একাধারে রাজনীতিবিদ, জনদরদি এমন নেতা পাওয়া সত্যিই দুর্লভ-স্মৃতিচারণ সভায় অনেকেই একথাটি অচীরেই স্বীকার করে গেছেন।
         এক ভাবগম্ভীর পরিবেশের মধ্যে বৃহস্পতিবার জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত হয় স্মরণসভার। করিমগঞ্জ তথা বরাকের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ রথীন্দ্র ভট্টাচার্যের জীবনের বিভিন্ন দিকে আলোকপাত করা হয় এদিনের সভায়।উপস্থিত বক্তাদের অনেকেই তাদের জীবনে প্রয়াত রথীন্দ্রবাবুর যে প্রভাব পড়েছিল সে কথা তুলে ধরেন। উত্তর করিমগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক তথা আসাম উদ্যোগিক পর্ষদের সভাপতি মিশনরঞ্জন দাস স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন,রথীন্দ্র ভট্টাচার্য ছিলেন এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। সকলের সাথে ছিল তাঁর সুসম্পর্ক। অনেকের বংশ পরিচয় থেকে শুরু করে বহু জ্ঞানের ভান্ডার ছিলেন তিনি। করিমগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সামাজিক সংগঠনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। করিমগঞ্জ কোপারেটিভ সোসাইটি, রেডক্রস, আইন মহাবিদ্যালয়, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী স্মৃতি ভবন ইত্যাদি সবখানে বিশেষ অবদান ছিল তাঁর। দু-দুবার করিমগঞ্জ বিজেপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে গেছেন একনিষ্ঠতার সাথে। দলের বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী ছিলেন তিনি। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সাথে ছিল তাঁর সুসম্পর্ক।

NEWS

অন্যদিকে করিমগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ রামানুজ চক্রবর্তী তাঁর বক্তব্যে বলেন, সর্বত্র নিরলস বিচরণ ছিল রথীন্দ্র ভট্টাচার্যের। প্রতিটি সামাজিক কাজে জড়িত থাকার ফলে সবার প্রিয় ছিলেন তিনি। ভোটার লিস্ট কিংবা রেশন কার্ড, এনআরসিতে নাম অন্তর্ভূক্ত করা সব কিছুতেই মানুষ ছুটে গেছেন তাঁর দুয়ারে। নিঃস্বার্থ মানসিকতার সাথে সকলের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন তিনি। রাজনীতির পাশাপাশি একজন বাঙালি হিসেবে ছিলেন তিনি গর্বিত। বরাক উপত্যকায় তাঁর মত অন্য কাউকে পাওয়া সত্যিই কঠিন। তাঁর দেখানো পথ শিখতে হবে নইলে ভবিষ্যতে বিপদে পড়তে হবে আমাদের। রামানুজ বাবু জানান প্রয়াত রথীন্দ্র ভট্টাচার্য কেবল বিজেপির নয় ছিলেন গোটা করিমগঞ্জের অভিভাবক।
           একইভাবে করিমগঞ্জ কলেজের অধ্যাপক সব্যসাচী রায় তার বক্তব্যে বলেন, তার জন্মের প্রমাণপত্রটিও বের করে দিয়েছিলেন রথীন্দ্র বাবু। আদর  করে পিন্টু কাকু বলে সম্বোধন করতেন তিনি। বাড়ির ছোটখাটো কাজ থেকে শুরু করে সব বিষয়ই তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করতেন। রথীন্দ্র বাবুর জীবনের মূল কাজ ছিল দরিদ্র,গরীব,মেহনতী মানুষের পাশে দাঁড়ানো। পরিবারের সদস্য থেকে সমাজের সকল শ্রেণীতে অবাধ বিচরণ ছিল তাঁর। সকলের ছিলেন তিনি প্রিয় পাত্র। তাই তাঁর স্মৃতিচারণ সভায় দাঁড়িয়ে রাজনীতির উর্ধ্বে সমাজ গঠনে এগিয়ে আসার অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান সব্যসাচী বাবু।

NEWS

অন্যদিকে ডাঃ মানস দাস তার বক্তব্যে বলেন, বিভিন্ন সময়ে তার বাবাকে নিয়ে এসে রথিন্দ্র বাবু বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতেন। তাই মানস বাবুর বাবা রথীন্দ্র ভট্টাচার্যকে লিভিং এনসাইক্লোপিডিয়া বলে সম্বোধন করতেন। তিনি নিজেও তাই মনে করেন। মানস বাবু যখন পুরোপতি ছিলেন সে সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ছুটে গেছেন রথীন্দ্র ভট্টাচার্য। সাধারণ মানুষের প্রয়োজন মেটাতে সর্বদাই সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। এমনকি তাকে বিজেপিতে আসার রাস্তাটাও রথীন্দ্র বাবুই দেখিয়েছিলেন। তাই রথীন্দ্র  বাবু'র প্রয়াণ গভীরভাবে মর্মাহত করেছে তাকে। সভায় উপস্থিত সকল বক্তাই শ্রদ্ধা ও আবেগে স্মরণ করেন রথীন্দ্র ভট্টাচার্যকে এবং সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তাঁর পরিবারের প্রতি । 

Posted On: Thursday, September 24, 2020 10:01 PM
blog comments powered by Disqus